Weight Loss The Dangerous Way
ক্রাশ ডায়েট শরীরের জন্য এক প্রকার ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়া! উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে ওজন কমানো একটি বড় বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। মানুষ ওজন কমায় সাধারনত সুন্দর গঠনের জন্য,একটা ভাল চাকরি পেতে আরও নানাবিধ কারনে । এছাড়া ওজন বেশি হলে ক্যান্সার,ডায়াবেটিস এবং উচ্চরক্তচাপ সহ নানা ধরনের আসংক্রামক রোগের ঝুকি অনেক বেড়ে যায় যাঁরা ওজন নিয়ে ভাবেন বা চিন্তিত, তাঁদের কাছে ‘ক্রাশ ডায়েট’ শব্দটি অত্যন্ত পরিচিত ও জনপ্রিয়। ফলাফল না জেনেই অনেকে শুরু করেন এই ডায়েট। ক্রাশ ডায়েট জনপ্রিয় হলেও এটা বিপজ্জনক ডায়েট হিসেবে বিবেচিত। ক্রাশ ডায়েট বা কঠোর খাদ্যনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ওজন কমানো শরীরের জন্য এক প্রকার ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়া । ক্রাশ ডায়েটের ফলে ওজন দ্রুত কমবে ঠিকই, কিন্তু এ কারণে শরীরের পুষ্টিঘাটতি প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। কারণ এক্ষেত্রে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে ওজন কমানোর পরিবর্তে, শরীরে ডিহাইড্রেশন হয়ে ওজন কমে এবং শরীরে ফ্লুইড ও ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং শরীরের গুরুত্বপূর্ণ পেশী প্রোটিন ভেঙ্গে যায়! এই বিষয়টা খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে এই রকম- “আপনি (একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি) যখন দৈনিক ১০০০থেকে ১২০০ কিলোক্যালির কম শক্তির খাবার গ্রহণ করবেন, তখন আপনার শরীর এটাকে জরুরী অবস্হা হিসেবে ধরে নেবে এবং মনে করবে যে বাইরের পরিবেশে খাদ্যের যথেষ্ট অভাব বা দূর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। আর এজন্য শরীরের পিটুইটারী গ্রন্থি মস্তিস্ককে নির্দেশ দিবে যাতে করে শরীর থেকে আর অতিরিক্ত চর্বি ভেঙ্গে গিয়ে শরীরকে শক্তি প্রদান না করে। কারণ শরীরে সিংহ ভাগ শক্তিই চর্বি আকারে জমা থাকে। (এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয় ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি - ঠিকানা - YouTube.com/HealthBarta) ফলে ক্রাশ ডায়েটিং এর সময় শরীর খাবার থেকে শোষণকৃত শক্তির বেশীর ভাগই ইনট্রেগরেটেড মেটাবলিজমের মাধ্যমে চর্বিতে পরিণত করার চেষ্টা করে এবং শরীরে চর্বির পরিমাণ আরো বাড়তে থাকে। এর ফলে শরীর প্রয়জনিয় শক্তির জন্য পেশী প্রোটিনকে ভাঙ্গা শুরু করে (Protein-sparing action এর মাধ্যমে)। এতে করে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক সময় দেখা যায় ক্রাশ ডায়েটের ফলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে দ্রুত সাফল্য লাভ হয় ঠিকই বা ওজন খুব দ্রুতহারে কমে। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওজন আগের ওজনের চেয়ে দ্বিগুণ হারে বেড়ে থাকে। খুব বেশি দিন ডায়েট মেনে চললে শরীর প্রয়জনিয় পুষ্টি উপাদান থেকে বঞ্চিত হয়। ফলে শরীরে প্রয়জনিয় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয়, যেমনঃ হাড় থেকে প্রয়জনিয় মিনারেল বেরিয়ে যায় ফলে হাড়ে ক্ষয় হয় এবং ফ্রাকচার দেখা দেয়। রক্তে আয়রন ও ভিটামিন বি-৬ এর ঘাটতি হয় ফলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। এছাড়া শরীরে সোডিয়াম ও পটাসিয়াম নামে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি দেখা দেয়। দীর্ঘমেয়াদী ক্রাশ ডায়েট শরীরের ভাইটাল অঙ্গসুমহ যেমনঃ হৃদপিণ্ড, বৃক্ক, যকৃত ও মস্তিস্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পাশাপাশি আরও কিছু সমস্যা যেমন: ক্ষুধা মন্দা, অস্থিরতা, ক্রমাগত মাথা ঘোরা, ঘুম না হওয়া, পেটে ব্যথা, পেট খারাপ, শারিক দুর্বলতা, কাজকর্মে উৎসাহ না পাওয়া, সবকিছুতে আগ্রহ হারানো, মানসিক চাপে ভোগা, এ ছাড়া চেহারায় ক্লান্তির ছাপ, ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হওয়া অথবা ত্বকের সজীবতা হারানো, চোখ অক্ষি কোটরের ভিতরের দিকে ঢুকে যায়, পেটের চামড়া সহ শরীরের অনান্য অংশের চামড়া ঢিলা হয়ে ঝুলে যায় ইত্যাদি ইতযাদি অনেক সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। তাই ওজন কমাতে চাই পরিমিত খাদ্য গ্রহণ ও কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম । এক্ষেত্রে আপনি একজন অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment